‘কমপ্লিট শাটডাউন’ জবি, যা জানাল প্রশাসন
সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের উন্নয়ন কাজ হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন অনশনরত শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে এ কর্মসূটি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর আগে গতকার রোববার অনশন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তাদের আন্দোলনের সূচনা হয়। অনশনে অসুস্থ হয়ে প্রায় ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উপাচার্যের আশ্বাসেও অনশন ভাঙেননি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি ও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির বিষয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় জবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিনের। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমলে নিয়ে আমরা কাজ করছি। যেহেতু আমরা এ কাজটা সরাসরি করি না, একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে করতে হয়, সেহেতু আমাদেরকে সে ভাবেই এগোতে হবে। আমরা ইউজিসিকে জানিয়েছি। তারা মন্ত্রণালয়ে দিবে, মন্ত্রণালয় আর্মডফোর্সের সঙ্গে কথা বলে আমাদেরকে ডাকবে। তখনই কেবল আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারব।’
শিক্ষার্থীদের এমন আশ্বাসের কথা জানানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে জবি কোষাধ্যক্ষ বলেন, ‘হ্যাঁ, জানানো হয়েছে।’ তাহলে আশ্বাস দেওয়ার পরও শিক্ষার্থীরা কেন কমপ্লিট শাটডাউনের মত আন্দোলন করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টা তারাই বলতে পারবে।’
শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না এবং দুর্নীতির অভিযোগ করে গণমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্য কোষাধ্যক্ষর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আগের প্রশাসনের কোনো দুর্নীতি থাকলে তার দায়ভার তো আমরা নিব না। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর যতটুকু পারব তাই বলেছি। আর কোনো অসচ্ছতা রেখে কাজ করিনি। নতুন ক্যাম্পাসের বিষয়েও শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর আস্থা রাখতে পারেন।’
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, সমাজকর্ম বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, সিএসই বিভাগ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিস, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ, আইইআর বিভাগ, ফার্মেসি বিভাগ, গণিত বিভাগ, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলা বিভাগ ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করে বিভাগের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘গতকাল (রোববার) থেকে আমরা তিন দাবিতে অনশন করছি। আজও অনশন চলবে, সঙ্গে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছি। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এদিকে প্রধান ফটকে তালা ঝোলানোয় ক্যাম্পাসে কোনো যানবাহন ঢুকতে পারছে না। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য পকেট গেট খোলা রাখা হয়েছে।
যে তিন দফা দাবি নিয়ে জবি শিক্ষার্থীরা অনশন করছেন সেগুলো হলো– দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা; শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা; অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত অন্তত ৭০ ভাগ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা দিতে হবে।