বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর মধ্যে মসারা যাওয়া তিনজনের পরিবারকে আইন অনুযায়ী প্রাপ্য সব সুযোগ সুবিধা দিতে বলা হয়েছে।
চাকরিচ্যুতদের পৃথক আপিল ও রিভিউ মঞ্জুর করে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগ এই রায় দেন।
এদিন আদালতে আপিল আবেদনকারীর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।
চাকরিচ্যুতরা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলো।
২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৮৫ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। সে রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ৮৫ কর্মকর্তার আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন। তবে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন, বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
পরবর্তীতে ২০১১ সালে রাষ্ট্র পক্ষের করা আপিলগুলো মঞ্জুর করে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে ৮৫ কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে প্রশাসনিক ট্র্যাইব্যুনালের রায় বাতিল করা হয়। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২৩ সালে পৃথক পাঁচটি আবেদন করেন চাকরিচ্যুতরা। পরবর্তীতে এসংক্রান্ত আপিলের সঙ্গে অপর চারটি রিভিউ আবেদন শুনানি শেষে আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। সে অনুযায়ী আজ রায় ঘোষণা করা হল।