মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় ইমামকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় ২ দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শনিবার সকালে চান্দিনা উপজেলার এতবারপুর ইউনিয়নের বানিয়াচং গ্রামের খন্দকার বাড়ির জামে মসজিদের হুজরাখানায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ঘটনার জের ধরে ইমাম মো. হাসান মুরাদ এর
সমর্থকরা কয়েকটি ঘর ভাঙচুর করে।
ইমাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার দড়িকান্দি এলাকার বাসিন্দা। তিনি চান্দিনার বানিয়াচং খন্দকার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম। গত ৪/৫ মাস ধরে তিনি এখানে কর্মরত আছেন।
ইমামের উপর হামলা করেছেন চান্দিনার বানিয়াচং গ্রামের মৃত মোহর আলীর ছেলে মো. নূরুল ইসলাম ও জাকির হোসেন। নূরুল ইসলাম ওই মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। জাকির হোসেন খোববাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
মসজিদের ইমাম একজন পেশাদার বক্তা। তিনি মসজিদের ইমামতির পাশাপাশি বিভিন্ন মাহফিলে বয়ান করেন। প্রতি শুক্রবার খুতবায় সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে এবং ইমান ও সুন্নি আকিদা প্রতিষ্ঠায় বয়ান করেন। এসব বয়ানে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ওই মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এলাকার এক ইউপি মেম্বার ও মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক; কিন্তু স্থানীয় মুসল্লিরা তার বয়ানে সন্তুষ্ট এবং তাকে মসজিদ থেকে বিতাড়িত না করার পক্ষে অবস্থান নেন।
শনিবার দুপুরে ইমাম হাসান মুরাদকে মসজিদ থেকে বের করতে উদ্যত হয়। এ সময় ইমাম এক মাসের সময় চাইলে তাকে সময় না দিয়ে মসজিদের মাইকের স্ট্যান্ড দিয়ে মারধর করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
ঘটনার পর শনিবার সন্ধ্যায় ইমামের ওপর হামলাকারী দুই শিক্ষক ও ইউপি মেম্বারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করেন এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আহত ইমাম জানান, আমি সুন্নি আকিদা বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বলি। আর এটাকে কোনোভাবেই মানতে পারছে না হাতেগোনা কয়েকজন।
নূরুল ইসলাম মাস্টার জানান, ওই ইমামকে এলাকার বেশ কিছু মানুষ ভালোভাবে গ্রহণ করছেন না। মুসল্লিদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
চান্দিনা থানার ওসি মো. নাজমুল হুদা জানান, ইমামকে মারধরের ঘটনার পর এলাকাবাসী কয়েকজনের বাড়িতে হামলা করেছে। এ বিষয়ে উভয়পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এলাকার প্রতিনিধিরা সোমবার দুপক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করার কথা রয়েছে।