এইচ এম হাছনাইন, ভোলা প্রতিনিধি
৩০ আগস্ট’২৪ ইং শুক্রবার বিকাল চারটায় দৌলতখান মধ্য বাজার এইচএম মার্কেট চত্বরে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ৩৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দৌলতখান থানা শাখার উদ্যোগে “নৈতিক অবক্ষয় রোধ, বৈষম্যমুক্ত সুশাসন ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইসলামী শাসনতন্ত্রই কার্যকর পন্থা” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতি এইচএম কেফায়েত এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা জেলা উত্তর শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন,ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ১৯৯১ সালে ২৩ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয় মাওলানা সৈয়দ ফজলুল করিম (রহ.) হাতে। আজ থেকে ৩৩বছর আগে তিনি যখন দেখলেন ক্যাম্পাস গুলোতে ছাত্ররা রাজনীতির নামে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি সহ অস্ত্রের মহড়া চলছে এবং রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র সংগঠনগুলো দিয়ে ক্ষমতায় আসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তখন এদেশের শিক্ষাবিদ, উলামায়ে কেরাম দ্বীনদ্বার বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদদের সাথে পরামর্শ করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ বাংলাদেশ নামক ছাত্র কাফেলাটি প্রতিষ্ঠিত করেন । কাফেলাটি হাটি হাটি পা পা করে ৩৩ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদেরকে আদর্শবান নৈতিকতা সম্পন্ন এক ঝাঁক শিক্ষার্থী উপহার দিয়েছে। যারা আগামীতে নেতৃত্ব দিলে বাংলাদেশ হবে একটি সুন্দর, আদর্শিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। যেখানে থাকবে না কোন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, লুন্ঠন , চুরি-ডাকাতি, দখলদারি সহ সকল ধরনের অন্যায় কাজ।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দুর্যোগ এবং অধিকার আদায়ে রাজপথে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সবসময় পাশে ছিল এবং ২০২৪-এ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সর্বপ্রথম রাজনৈতিকভাবে একাত্মতা ঘোষণা করেছিলেন এবং এই আন্দোলনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মী মাহফুজুর রহমান সহ মোট ১৯ জন ভাই শাহাদাত বরণ করেন। আগামীতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ শিক্ষার্থীদের প্রতিটি অধিকার আদায়ে পাশে থাকবে। এজন্য সকলকে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ভাইদের একটি আদর্শিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শপথ নিতে হবে।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র সমাজের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফ্যাসিবাদের সরকারের পতন হয়। তারপর থেকে আমরা দেখেছি একটি মহল আবার স্বৈরাচারী সরকারের মতই হাট-বাজার, লঞ্চ ঘাট, সবজায়গাতেই দখলদার লুটতরাজ নতুন ভাবে শুরু করেছে । যা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। ছাত্র সমাজ এভাবে দখলদারি দেখার জন্য এদেশকে হাজারো শহীদ ভাইদের রক্তের মাধ্যমে দ্বিতীয় বারের মতো দেশকে স্বাধীন করেনি। তারা শুধু যে দেশকে স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদও দখলদার মুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছে। বাংলাদেশে আর দ্বিতীয় কোন দখলদারদের হাতে ছাত্র সমাজ দিতে চায়না রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা। তারা চায় আগামীতে সুষ্ঠ সকল দলের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন। সেজন্য বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকারে কাছে দাবি রাখেন, সকল দলের অংশগ্রহণে (PR) সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করে এদেশের তরুণ সমাজের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেন । বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা গণহত্যার সাথে জড়িতদের তাদের অতি দ্রুত বিচারের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দৌলতখান থানা শাখার সভাপতি মাওলানা আবু সাঈদ আব্বাসী, সেক্রেটারি মাওলানা আমজাদ হোসেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ দৌলতখান থানা শাখার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইকবাল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, প্রকাশনা ও দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ রাফি হাসান,কওমী মাদ্রাসা সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি, থানা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণ।