আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুলিশ পুরো উদ্যমে কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহের রেঞ্জ ডিআইজি ড. মো. আশরাফুর রহমান। তিনি বলেছেন, এরইমধ্যে পুলিশের টহল জোরদার করা হচ্ছে। আতঙ্ক কাটাতে তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। মোট কথা, আমরা পুলিশের চেনা আচরণে পরিবর্তন আনতে চাই। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর পুলিশ লাইনসে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় নবনিযুক্ত ডিআইজি এ কথা বলেন। এ সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে ড. মো. আশরাফুর রহমান বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে। গুম, খুনসহ সব অপরাধ বিবেচনায় আনতে হবে। ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার বিস্ফোরণ, দীর্ঘদিনের প্রেক্ষাপট। এতে মানুষ বাকরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে। আমরা সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। সেই সঙ্গে নিহত ও আহত পুলিশ সদস্যদের প্রতিও সম্মান ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। সভায় সাংবাদিক নেতাদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, বর্তমানে পুলিশ কেন কাজ করছে না, তা আপনারা বোঝেন। আমরা চেষ্টা করছি, কাজ করছি। অনেক পরিবর্তন দেখবেন। পুলিশের প্রতি জনগণের যে আস্থা নষ্ট হয়েছে, আমরা তা ফিরিয়ে আনতে চাই। পুলিশ হবে আইনের। আইনের ধারায় যা আছে, পুলিশ হবে তা। কোনো বাধায় আমরা পিছ পা হবো না। মামলায় কোনো মানুষ যেন হয়রানি না হয় তা খেয়াল রাখা হবে। পুলিশ বাদী হয়ে কোনো মামলা করবে না। যেকোনো মামলা তদন্ত করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়মনসিংহ নগরীর যানজট সমস্যা নিরসনে সবার সহযোগিতা চাই। আপনাদের (সাংবাদিক) কলমের পূর্ণ শক্তির ব্যবহার চাই। দেশের মানুষ বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে। ভেঙ্গে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো আমরা মেরামত করতে চাই। এক্ষেত্রে সব মহলের সহযোগিতা নিয়েই আমরা কাজ করতে চাই।এ সময় জেলার নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জেলার আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে গণমাধ্যমসহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি। সবাইকে নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে চাই। শহরের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নিরাপদ ময়মনসিংহ গড়তে চাই। সভায় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হানুল ইসলাম ফকিরের সঞ্চালনায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা ও ময়মনসিংহ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ শামসুল আলম খান, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অমিত রায়, বিএমইউজে সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক খান, সাংবাদিক হোসাইন শাহিদ, স্বাধীন চৌধুরী, মোঃ আইয়ুব আলী, মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ নজরুল ইসলাম। সাংবাদিকদের বক্তব্যে মোঃ শামসুল আলম খান ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহত পুলিশ সদস্যদের প্রতি সম্মান ও সমবেদনা জ্ঞাপন করে বলেন, মামলায় কোনো সাধারণ মানুষ যেন হয়রানি না হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। পুলিশের প্রতি জনগণের যে আস্থা নষ্ট হয়েছে তা আবারও ফিরিয়ে আনতে হবে। এতে আমরাও সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত ডিআইজি সৈয়দ আবু সায়েম, মো. শরীফুর রহমান, কমান্ডেন্ট পুলিশ সুপার খালিদ বিন নূর। এতে গণমাধ্যমকর্মীসহ জেলা পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।