ময়মনসিংহের ত্রিশাল সরকারী নজরুল ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা ও তার স্বামী প্রাক্তন সিভিল সার্জন ডাঃ মাহবুবুল হকের বিরুদ্ধে একটি মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঢালাও মিথ্যা,ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক সংবাদ প্রকাশ করায় তীব্র প্রতিবাদ নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সরকারী নজরুল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ,শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সরকারী নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও শিক্ষকরা জানান,কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা একজন সৎ,দক্ষ এবং দায়িত্বশীল প্রশাসক হিসেবে সব মহলে অত্যন্ত সমাদ্রিত।কলেজের উন্নয়নে ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সব সময় কাজ করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা।কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হতে না পেরে একজন সহকারী অধ্যাপক ও তার অনুসারীদের নিয়ে একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে যড়যন্ত্রমূলকভাবে সংবাদ পরিবেশন করেছেন বলে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও’তে তা স্পষ্ট করেছেন সংশ্লিষ্ট ওই সাংবাদিক। ফলে প্রমাণিত হয়েছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পরিবেশন করা সংবাদগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত,মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক।
কলেজের শিক্ষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সরকারী নজরুল কলেজটি ত্রিশাল পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা-ময়মনসিংহ মাহাসড়কের ত্রিশাল বাসষ্ট্যান্ড’এ অবস্থিত। কলেজ ক্যাম্পাস এলাকাটি জনবহুল ও বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় কলেজের পূর্ব সীমানা ঘেষে একটি বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা হয়। যেখানে রয়েছে একটি কাঁচা বাজার যা কলেজ মার্কেট নামে পরিচিত।সেখানে ব্যাংক, রেস্টুরেন্টসহ বেশ কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবস্থিত। এটি ২০১১ সালে নির্মান ও বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। কলেজ মার্কেট থেকে প্রাপ্ত আয় কলেজের হিসাবে জমা হয়। যা কলেজের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হয়। কলেজ জাতীয়করণ/সরকারী করণের পর কলেজের যাবতীয় আয়-ব্যয়ের হিসেব সরকারী কোষাগারে জমা হচ্ছে। কলেজটি সরকারী করনের পর দ্বিতীয় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে জেষ্ঠ্য শিক্ষক জয়নব রেখা যেন দায়িত্ব না নেয় এবং অপারগতা প্রকাশ করেন সে জন্য চাপ সৃষ্টি করেন আরেকজন সহকারী অধ্যাপক।সকল চাপ ও প্রভাব উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন জয়নব রেখা।কলেজের পড়ালেখার মান উন্নয়ন,কলেজের শৃংখলা ও নিরাপত্তায় ব্যাপক অবদান রাখেন তিনি। সকল শিক্ষক,অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আস্থাভাজন হয়ে উঠেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা। ঠিক ওই সময় কলেজের ওই সহকারী অধ্যাপক বিভিন্ন মিথ্যা,বানোয়াট,ভুয়া ও ভিত্তিহীন তথ্যসহ একজন সাংবাদিককে দিয়ে দিনের পর দিন মিথ্যা,কাম্পনিক সংবাদ ও ফেইসবুকে ভুয়া আইডি দিয়ে অপপ্রচার শুরু করেন। যা কলেজের সুনাম নষ্ট করে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা জানান, আমি অত্যন্ত সততার সাথে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি। ১৯৯৪ সাল থেকে জীব বিজ্ঞানের একজন প্রভাষক হিসেবে এই কলেজে কর্মজীবন শুরু করি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ২০২৩ সালে দায়িত্ব পেয়েছি। এখন নিয়মিত ক্লাশ,পরীক্ষা ও শ্রেণি কার্যক্রম হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নিয়ম মেনে চলছে। পড়ালেখার মানোন্নয়ন হয়েছে। এটি এখন আদর্শ কলেজ হিসেতে পরিচিতি পেয়েছে। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে একটি মহল চক্রান্ত করছে। তারা আমাকে ও আমার স্বামীকে নিয়ে কাল্পনিক গল্প বানিয়ে অপপ্রচার করছে। আমি কখনও কলেজের একটি টাকাও অপচয় করিনি। অসৎ উপায়ে কোন আয় নেই। আমার স্বামী একজন অভান্ত সৎ ও মানবিক মানুষ। তিনি সিভিল সার্জন ছিলেন। সমাজে আমাদের ব্যাপক পরিচিতি ও গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে। আমাদের দুজনের সারা জীবনের আয়,বাবার সম্পতি বিক্রি ও ঋণের মাধ্যমে ময়মনসিংহ শহর থেকে দূরে একটি বাড়ী করেছি তাও আবার ১৪ বছরে ধাপে ধাপে। এটি নিয়ে কাল্পনিক সংবাদ পরিবেশ করে আমাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়েছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। এভাবে যেন কারো মান-সম্মানে আঘাত না করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখার স্বামী সাবেক সিভিল সার্জন,সাবেক উপ-পরিচালক ডাঃ মো. মাহবুবুল হক জানান, আমি ২৯/০৬/১৯৮৪ সাল থেকে চিকিৎসক হিসেবে আমার কর্ম জীবন শুরু করি। ২০১৬ সাল পর্যন্ত আমার কর্ম জীবনে আমি মেডিকেল অফিসার, কনসালটেন্ট,লেকচারার,উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা,সিভিল সার্জন এবং সর্বশেষ স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের উপ-পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহন করি। দীর্ঘ কর্ম জীবনে আমি কখনও অনৈতিকভাবে একটি পয়সাও আয় করিনি।সৎ ও আর্দশিক জীবন যাপন করেছি। সে জন্য কর্ম জীবনে কোথাও আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আমি ১৯৯৭ সালে ময়মনসিংহ পৌরসভার বাইরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ২২ শতাংশ নিচু জমি ক্রয় করি। তিন ধাপে মোট ৩৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেছি ১৯ লাখ ৯০ হাজার টাকায়। ২০০৭ সালে আমি বাড়ীর কাজ শুরু করি। ধাপে ধাপে ১৪ বছরে ৬ তলা বাড়ীর কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। এ বাড়ী নির্মাণ করতে গিয়ে আমি আমার জীবনের যাবতীয় সঞ্চয়,বাবার প্রাপ্ত সম্পত্তি,আমার স্ত্রীর বাবার বাড়ী থেকে প্রাপ্ত সম্পত্তি ও আমার যাবতীয় সম্পদ বিক্রি করেছি।এমনকি ব্যাংক থেকে ঋণ পর্যন্ত নিয়েছি। সর্বশেষ আমার পেনশনের টাকাগুলোও বাসা নির্মাণে ব্যয় করেছি। আমার বিরুদ্ধে এভাবে দিনের পর দিন মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে আমার পরিবার ও আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়েছে। শুধু পত্রিকায় না অপরিচিত ফেইক আইডি থেকে মিথ্যা বানোয়াট কাল্পনিক কথা লেখা হয়েছে যা অত্যন্ত আপত্তিকর। দিনের পর দিন এভাবে আমাকে হেয় করায় আমি মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছি। আমি এর বিচার চাই।
নজরুল কলেজের সিনিয়র প্রভাষক ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, অধ্যক্ষ ম্যাডাম অত্যন্ত সৎ,বিনয়ী ও দক্ষ প্রশাসক। তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন দুই বছর হয়েছে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কলেজের পড়ালেখার মান উন্নত হয়েছে। কলেজের পবিরেশ উন্নত ও পরিচ্ছন্ন হয়েছে।শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সবাই উনার উপর আস্থাশীল। উনার বিরুদ্ধে অভিযোগুলো মিথ্যা, ভুয়া ও ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কলেজের সিনিয়র প্রভাষক ইশরাত জাহান জানান,জয়নব রেখা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেয়ার পর অবকাঠামোগত অবস্থা,শিক্ষার মান উন্নয়ন সহ পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর।তিনি নীতি ও আদর্শতার সহিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ জানান,আমি যতদূর জানি সরকারী নজরুল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা একজন সৎ, দক্ষ ও ভাল মানুষ।আমি সভাপতির দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় উনাকে অনিয়ম,দুর্নীতি বা অপচয় করতে দেখেনি।উনার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আমি শুনেছি। এ বিষয়ে আমি সত্যতা পায়নি।