পরপর দুই বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় কলেজ অধ্যক্ষ চাকরিচ্যুত
পর পর দুই বছরে ২বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় চট্টগ্রাম ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিংয়ের অধ্যক্ষ ডলি আক্তারকে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে। বিনা নোটিশে একদিনের মধ্যেই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। গত বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।শুধু তাই নয়, মধ্যরাতে তার আট মাস বয়সী শিশুসহ কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
কলেজ প্রতিষ্ঠানটি ইম্পেরিয়াল হসপিটালের পরিচালিত। কলেজটির অধ্যক্ষ নিয়োগ ও চাকরিচ্যুত করার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ নিয়োগ কমিটির অনুমোদন নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেটিও না মেনে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ ডলি আক্তারের।
চাকরিচ্যুত করার নোটিশে দেখা যায়, অধ্যক্ষ ডলিকে চাকরিচ্যুত করার কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। ইম্পেরিয়াল হসপিটাল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে অধ্যক্ষ ডলিকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ওই নোটিশ ৯ অক্টোবর জারি করা হয়। ইম্পেরিয়াল হসপিটালের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. আরিফুর রহমান নোটিশে স্বাক্ষর করেন।
অধ্যক্ষ ডলি আক্তার বলেন,পরপর দুই বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় কোনো কারণ না দেখিয়ে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মধ্যরাতে হোস্টেল থেকে বের করে নগরীর একটি হোটেলে রেখে আসে ইমপেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড,বর্তমানে অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ।
চাকরিচ্যুত অধ্যক্ষ আরও বলেন, গত বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি পেয়েছিলাম। এরপর অসুস্থতার কারণে গত ২১ সেপ্টেম্বর ইম্পেরিয়াল হসপিটালের প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. দিল আনজিজের কাছে যাই। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা করে পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হই। এ অবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করতে থাকে এবং মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলতে থাকে ‘আপনি গত বছরও চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন এবং এই বছরও আবার ছুটি নেবেন, তাই আপনি পদত্যাগপত্র দিয়ে বিদায় নিয়ে নিন।
তিনি আরও বলেন, আমি পদত্যাগ না করায় ৯ অক্টোবর সকালে কর্তৃপক্ষ মানব সম্পদ বিভাগে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তৎক্ষণাৎ পদত্যাগপত্র দিতে বলে, অন্যথায় টার্মিনেট করা হবে বলে। এরপর আমি পদত্যাগ করব না জানালে তখন একটি ফটোকপি চাকরিচ্যুতির নোটিশ দেয় ও তৎক্ষণাৎ কলেজ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র কলেজ সেক্রেটারির কাছে বুঝিয়ে দিয়ে কলেজ হোস্টেল ছেড়ে দেয়ার জন্য বলে।
অধ্যক্ষ ডলি আক্তার বলেন, চাকরির শুরু থেকেই বিগত প্রায় ৩ বছর কলেজ হোস্টেলে অবস্থান করছিলাম, এমনকি বিগত বছর মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়ও আমি হোস্টেলে অবস্থান করে কলেজের কাজে সহযোগিতা করেছি। আমার পরিবার ঢাকায় অবস্থান করে বিধায় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলাম হোস্টেল ত্যাগের জন্য যেন কয়েকদিন সময় দেয়া হয়। এতে আমার স্বামী এসে আমাকে নিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত অমানবিকভাবে আমাকে ওইদিন মধ্যরাতে আট মাস বয়সের বাচ্চা ও আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে নগরীর হোটেল পেনিনসুলায় রেখে আসে।