বিচারের পর আ.লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে: ড. ইউনূস
ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগ যেসব হত্যা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে স্বাগত জানানো হবে, যখন (দলটির) যারা হত্যা ও ক্ষমতার অপব্যহারের সাথে জড়িত তাদের বিচার সম্পন্ন হবে। অন্যরা নির্বাচনে অংশ নিতে যতটা স্বাধীন তারাও ততটাই স্বাধীন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অঙ্গনে লড়াই করব।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে চলে যাওয়া এবং সেখান থেকে তার কথা বলার বিষয়টি নিয়েও নিজের অভিমত জানিয়েছেন প্রফেসর ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘তাকে শুধু ভারত আশ্রয়ই দেয়নি। সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো, তিনি সেখান থেকে কথা বলছেন। যা আমাদের জন্য অনেক সমস্যার সৃষ্টি করছে। তার কণ্ঠ শুনলেই মানুষ অখুশি হয়। অর্থাৎ এ বিষয়টি আমাদের বন্ধ করতে হবে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতনের পর যখন তাকে দায়িত্ব নিতে বলা হয়, তখন প্রথমে তিনি দায়িত্ব নিতে চাননি। কিন্তু পরে গণঅভ্যুত্থানে নিহত মানুষ ও তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করে প্রধান উপদেষ্টা শপথ নেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমে, আমি দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি বলেছি, অন্য কাউকে খুঁজে বের করুন। কিন্তু পরে বলেছি, ঠিক আছে, আপনারা জীবন দিয়েছেন, আপনার বন্ধুরা জীবন দিয়েছেন। তাহলে আমি আমার সেরাটা চেষ্টা করব।’
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদের সম্পর্কের বিষয়টিও উঠে এসেছে টাইম ম্যাগাজিনের সাক্ষাৎকারে। এতে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে প্রফেসর ইউনূসের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে শেখ হাসিনার পতনের পরও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছে।
কিন্তু ট্রাম্পের আবারো ক্ষমতায় আসার বিষয়টি গভীর চিন্তার উদ্রেক করেছে। এরমধ্যে আবার গত ৩১ অক্টোবর ট্রাম্প বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ এবং ভারতীয় আমেরিকানরা ট্রাম্পকে দিয়ে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে চাইছে, যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ড. ইউনূসের সাথে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব আছে। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন ট্রাম্পের কাছে হেরে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ড. ইউনূস বলেছিলেন তিনি কথাও বলতে পারছেন না।
কিন্তু ট্রাম্পের আবারো ক্ষমতায় আসার বিষয়টি গভীর চিন্তার উদ্রেক করেছে। এরমধ্যে আবার গত ৩১ অক্টোবর ট্রাম্প বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ এবং ভারতীয় আমেরিকানরা ট্রাম্পকে দিয়ে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে চাইছে, যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ড. ইউনূসের সাথে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব আছে। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন ট্রাম্পের কাছে হেরে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ড. ইউনূস বলেছিলেন তিনি কথাও বলতে পারছেন না।
নির্বাচনের আগে সংস্কারের বিষয়টি অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে যে গুরুত্বপূর্ণ সেটি পুনর্ব্যক্ত করেছেন ড. ইউনূস। তবে এ সংস্কারের জন্য মানুষের জীবনমান উন্নয়নের দরকার। যদি জীবনমান উন্নয়ন না হয় তাহলে মানুষ ধৈর্য্যহারা হয়ে যেতে পারেন, এমনকি বলতে পারেন আওয়ামী লীগের সময় ভালো ছিল।
এ বিষয়টি ড. ইউনূসের বেশ ভালো করেই জানা রয়েছে। যে কারণে সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন তিনি। প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, ‘এ পুরো অভ্যুত্থানের মূল হলো সংস্কার। এ কারণেই আমরা এটিকে বলছি বাংলাদেশ ২.০।’