চিকিৎসা নেওয়ার জন্য করাচি-লাহোরে যান’, বাংলাদেশ ইস্যুতে কড়া বার্তা শুভেন্দুর
ভারত-বিদ্বেষী কথাবার্তার অভিযোগ তুলে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও জোরদার করার হুঁশিয়ারি দেন।
হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাস প্রভুর গ্রেফতারিতে উত্তাল বাংলাদেশ। সেই ক্ষোভের আঁচ এসে পড়েছে ভারতেও। ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছে বিজেপি। এদিন বিজেপি বিধায়কদের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে গিয়ে দেখা করে আসে। সেখানে গিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসে তারা। ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস থেকে বেরিয়ে ঘটনা নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশি বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে কী বলেছেন তাঁরা সেকথা জানান। এমনকী ভারত-বিদ্বেষী কথাবার্তার অভিযোগ তুলে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও জোরদার করার হুঁশিয়ারি দেন।
বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, “পরিষ্কার বলেছি, ভারত-বাংলাদেশের একটা অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক আছে। সেই সম্পর্ক আপনারা নষ্ট করছেন। ‘৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, যার বিজয়দিবস আসছে ১৬ ডিসেম্বর। সেই বিজয়দিবসের প্রাক্কালে ভারতীয়দের যোগদান-অবদান, ভারত সরকার, ভারতীয় সেনা, বিএসএফ-এর অবদান এটা আপনারা কেউ চেষ্টা করলেও মুছে ফেলতে পারবেন না। আমরা বলেছি, এবঙ্গে কয়েক কোটি যাঁরা আছেন, তাঁরা ধর্মীয় উৎপীড়ন এবং দেশভাগের কারণে আসতে বাধ্য হয়েছেন। আমি বলেছি, মতুয়া সমাজের স্রষ্টা ওরাকান্দিতে জন্মগ্রহণ করেছেন। আমরা যাঁরা ভিতরে গিয়েছিলাম, আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে বাংলদেশের বহু মানুষের আত্মীয়তা আছে। শুধু আমাদের নয়, কয়েক কোটি মানুষের। এই ধরনের ভারত-বিদ্বেষী কথাবার্তা, ভারত-বিদ্বেষী আচরণ , এই রকমের হিন্দু নিধন, হিন্দুদের আস্থার জায়গা মন্দিরকে টার্গেট করা, এইভাবে হিন্দু সনাতনী প্রচারক প্রভুদের মিথ্যা মামলায় জেলে পোরা …এজিনিস আমরা বিগত দিনে দেখিনি। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, এনাফ ইজ এনাফ। বন্ধ করুন এই নিধন। আমরা বলেছি, যদি না করেন এবং চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে মুক্তি না দেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তিনি একজন বাংলাদেশের রাষ্ট্রবাদী বৈষ্ণব ভাগবত প্রচারক। তাঁর যত বক্তব্য আপনি আমি শুনেছি, তাতে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে কাঁধে নিয়ে সেখানে তিনি মুক্তি যুদ্ধের পক্ষে…আমার মাটি আমার দেশ, বাংলাদেশ ছাড়ছি না ছাড়ব না…স্লোগান দিয়েই করেছেন। তাই তাঁকে যে অপবাদ দেওয়া হয়েছে, এটা সম্পূর্ণভাবে তালিবান, আইএস এবং মৌলবাদী শক্তির পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।”
এরপর তিনি একটি ভিডিও শুনিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক প্রশাসক তিনি ক্যাবিনেটমন্ত্রীর পদমর্যাদার সমান। তিনি একজন জাতীয় মন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন। তিনি সরাসরি ভারতকে আক্রমণ করছেন। এই প্রশাসককে বলতে চাই, নুন আপনার আছে, আয়োডিনটা ভারতের। আমি এখান থেকে দাবি করছি, ভিসা একশো শতাংশ বন্ধ করুন। আমরা প্রয়োজন হলে একদিন অপেক্ষা করে ভিসা দফতরেও যাব। সম্পূর্ণভাবে ভিসা দেওয়া বন্ধ করুন। আমদানি-রফতানি পরামিট ইস্যু করা বন্ধ করুন। বাকিটা আমরা বর্ডারে করব সোমবার থেকে। বলে দিলাম। চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে নিঃশর্ত মুক্তি, হিন্দুদের ওপর আক্রমণ-মন্দির ভাঙা বন্ধ করুন। আর এই ধরনের নাবালকদের (মন্ত্রীর উল্লেখ করে) যাঁদের ওখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বসিয়েছেন, এই নাবালক যাঁরা মন্ত্রীর পদমর্যাদার তাঁদের এ ধরনের ভারত-বিরোধী কথা বলা বন্ধ করুন। আর চিকিৎসা নেওয়ার জন্য করাচি-লাহোরে যান। এখানে আসবেন না। পরিষ্কার বলে দিতে চাই আমরা।”