সারাদেশে বিএনপির আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে হাইকোর্ট বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের নেতাদের খালাস দেওয়ায় আনন্দ মিছিল করেছেন দলের নেতাকর্মীরা। দেশের বিভিন্নস্থানে রোববার দিনব্যাপী আনন্দ মিছিল হয়।
রোববার হাইকোর্ট ডিভিশনের দুই সদস্যের একটি বেঞ্চ গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ সকল আসামিকে খালাস দেয়। ঘোষণার পর পরই সারাদেশে আনন্দ মিছিলের সাথে সাথে মানুষের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে রোববার সন্ধ্যার আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে আনন্দ মিছিল বের হয়। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী মিছিলে অংশ নেন। নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে নাইট এঙ্গেল মোড় ঘুরে আনন্দ মিছিলটি আবার নয়াপল্টনে এসে শেষ হয়।
এছাড়াও বগুড়া, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, যশোরসহ দেশের ৬৪টি জেলার বিভিন্নস্থানে অনুষ্ঠিত হয় আনন্দ মিছিল। সোমবারও অনেক জায়গায় আনন্দ মিছিলের তথ্য জানিয়েছে বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে রোববার (১ ডিসেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার ছিলো অবৈধ। আইনে এটা টেকে না। যে চার্জশিটের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত বিচার করেছিলেন তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিলো না।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এই ঘটনায় আনা মামলায় ২০১৮ সালে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ বিচারক শাহেদ নূরউদ্দিন রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ২০০১-২০০৬ আমলের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও আসামি শেখ আবদুস সালাম ২০২১ সালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইনসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে ১১ জনকে দণ্ড দেয় বিচারিক আদালত। এরপর ওই বছরই হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স আসে। পাশাপাশি দণ্ডিত কারাবন্দিরা আপিল দায়ের করেন।
এরপর তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) রায় দেন।
রায়ের পর একই বছর বিচারিক আদালতের রায়সহ মামলা দুটির নথিপত্র হাইকোর্টে এসে পৌঁছে। পেপার বুক প্রস্তুত করাসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে মামলায় আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি সম্পন্ন হয়। এবার পাওয়া গেলো হাইকোর্টের রায়ও।
এ মামলায় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে সম্পৃক্ত করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে বারবার দাবি করে আসছিলো দলটি।