মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০০ পূর্বাহ্ন

ঝড়ে ভেঙে পড়লো লালমনিরহাটের ঐতিহ্যবাহী হালাবট গাছ ।

রির্পোটারের নাম
  • প্রকাশ: রবিবার, ২ জুন, ২০২৪
  • ১৪১ দেখা হয়েছে :

মোঃ গোলাপ মিয়া ষ্টাফ রিপোর্টারঃ

রাত ৮টার পর হঠাৎ করে কালো মেঘে ঢাকা পড়েছিল লালমনিরহাট। আকাশে মেঘের ঘনঘটার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ঝড় আর প্রচন্ড বৃষ্টি। কালো মেঘের বৃষ্টির আর ঝড়ে ভেঙ্গে পড়েছে লালমনিরহাটের কিংবদন্তীমূলক স্থান হালাবটের তলের সেই বহু পুরানো ঐতিহ্যের হালাবট গাছটি।প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, কিছুক্ষণ ঝড় হাওয়ার পরে মর মর বিকট শব্দে হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ে এই বটগাছটি। ক্রমাগত সবুজ হারানো এই লালমনিরহাট শহরের হালাবটের তল হিসেবে পরিচিত সবুজের এক বড় আশ্রয় গাছটি। এ বটগাছটির তলে রয়েছে প্রচুর ঘাস।

ভেঙে পড়া বটগাছের পাশে দাঁড়ানো একাধিক প্রবীণদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা জন্মের পর থেকে এই গাছ দেখে আসছে। লালমনিরহাটের পুরাতন ঐতিহ্যের গাছগুলোর মধ্যে এই বটগাছ অন্যতম। হঠাৎ ঝড়ে ভেঙে পড়ায় লালমনিরহাটবাসী একটি ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষ হারালো।

উল্লেখ্য যে, লালমনিরহাট জেলার একটি কিংবদন্তীমূলক স্থানের নাম ‘হালাবটের তল’। প্রায় দেড় একর জমি জুড়ে বিস্তৃত অতি পুরানো এ বটগাছের অবস্থান লালমনিরহাট পৌরসভাধীন সাপটানা (উত্তর) মৌজায় লালমনিরহাট-কুলাঘাট সড়কের উত্তর পাশে।
জনশ্রুতি থেকে জানা যায় যে, বটগাছটির বয়স নূন্যতম ১৩০বছর। গাছের নিচের ঈদের মাঠটি আরও পুরানো। পাকিস্তানআমলে(১৯৫১-৫২খ্রিষ্টাব্দে) স্থানীয় খতি ফকির জৌনপুরের জনৈক পীর সাহেবকে এনেছিলেন ওয়াজ করার জন্য। পীর সাহেব এ গাছের নিচে বসে ওয়াজ করেছিলেন। আগত লোকজনদের ওজু করার জন্য মাঠের পাশে একটি কুয়া খনন করা হয়েছিল। কিন্তু কুয়ায় পানির অপর্যাপ্ততার কারণে ওজু করার সমস্যা সৃষ্টি হয়। এতে পীর সাহেব এক বদনা পানি নিয়ে সেটি কুয়ায় ঢেলে দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে আর ওজুর পানির অভাব হয়নি। আবার ওয়াজ শেষে খিচুরী বিতরণের সময় তাও কম হওয়ার আশংকা দেখা দিলে পীর সাহেব খিচুরীর হাড়ির মুখে ঢাকনা দেন। পরে তার নির্দেশ অনুযায়ী ঢাকনা একটু সরিয়ে খিচুরী বিতরণ শুরু করা হয়। ঐ হাড়ির খিচুরী আগত লোকজনের মাঝে বিতরণ শেষে পার্শ্ববর্তী কয়েক গ্রামের লোকজন যারা ওয়াজ শুনতে আসেনি তাদের জন্যও পাঠিয়ে দেয়া সম্ভব হয়। পীর সাহেব ওয়াজ করে চলে যান, কিন্তু ওয়াজ করার মাঠটি এলাকার লোকজনের কাছে পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হতে থাকে, সাথে সাথে সাহেবকে ছায়াদানকারী বট গাছটির প্রতিও বিশেষ সম্মান দেখানো শুরু হয়। দু’একজন এখানে এসে মানত করে সুফল পাওয়ার পর পাকিস্তান আমলেই মানতের প্রচলন হয়। আর তা ব্যাপকতা লাভ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর। এখনও প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক লোকজনকে মানতের উদ্দেশ্যে এখানে আসতে দেখা যায়।
লালমনিরহাট জেলা সদর হতে সড়ক পথে গাড়ী কিংবা রিকসা নিয়ে এখানে যাওয়া যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category



© All rights reserved ©  রংধনুটিভি ২০২৪
ESA IT BD Software Lab Trishal