ময়মনসিংহের ত্রিশালে অর্থের অভাবে হৃদযন্ত্রের জটিল রোগে আক্রান্ত এক শিশুর চিকিৎসায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
শিশুটির চিকিৎসায় চার লাখ টাকা প্রয়োজন, কিন্তু তার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় তাঁদের পক্ষে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
শিশুটির নাম আব্দুল আল গালিব (৩)। সে উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী খারহর গ্রামের মোঃ জামানের ছেলে।
জানা গেছে, কার্ডিওলজিস্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নূরুন্নাহার ফাতেমা শিশুটির হার্টে জন্মগত ছিদ্র রয়েছে জানিয়ে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে অপারেশন করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সময় যাচ্ছে এবং হার্টের ছিদ্র আকারে বড় হচ্ছে। তাই দ্রুত অপারেশন না করালে ধীরে ধীরে শিশুটি কষ্ট পেয়ে নিস্তেজ হয়ে মৃত্যু বরণ করবে। এ অপারেশনের জন্য ৪ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। গালিবের দরিদ্র বাবা জামানের পক্ষে কোন ক্রমেই এতো গুলো টাকা জোগাড় করে ছেলের অপারেশন করানো সম্ভব নয়। তাই গালিবের বাবা-মা ছেলেকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবান ও সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
গালিবের বাবা জামান দিনমজুরি কাজ করে সংসার চালান। বহু কষ্টে জমানো টাকার সাথে আরও কিছু টাকা ঋণ করে সাত বছর আগে পারি জমিয়েছিলেন বিদেশে। প্রতারণার স্বীকার হয়ে কয়েকমাসের মধ্যেই তাকে ফেরত আসতে হয় দেশে। বাড়িভিটা ছাড়া আর কোন আবাদি জমাজমি নেই তার। দেশে আসার বছর ছয়েক পরেই তাদের কোলজোড়ে আসে একই চেহারার ফুটফুটে দুই শিশু। তাদের লালন-পালনে শুরু হয় নতুন যুদ্ধ। এর মাস তিনেক পর শিশু আলিফ ও গালিব জমজ দুই ভাই একসাথেই আক্রান্ত হয় নিউমোনিয়ায়। শ্বাসকষ্ট ও বুকের নিচে ধেবে যাওয়ায় তখন হাসপাতালে ভর্তি হলে ডাক্তার জানাই তাদের মধ্যে গালিব জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত। সে থেকেই বিভিন্ন ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে তার চিকিৎসা করে যাওয়ার চেষ্টা করছেন এই দরিদ্র পরিবারটি। এখন অপারেশনের জন্য লাখ চারেক টাকার প্রয়োজন হওয়ায় নিরুপায় হয়ে ঘুরছেন মানুষের ধারে ধারে।
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আব্দুল হাই বলেন, ‘শিশুটির পরিবার একেবারেই গরীব। বাড়িভিটা ছাড়া তাদের আর কোন জমিজমা নেই। চার লাখ টাকা খরচ করে তাদের পক্ষে অপারেশন করা সম্ভব নয়। কোন বিত্তবান ব্যক্তি শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে শিশুটি বেঁচে যেতো। কেউ এগিয়ে না এলে বাবা-মায়ের চোখের সামনেই অল্প সময়ের মধ্যে ধুঁকে ধুঁকে মারা যাবে শিশুটি।’
স্থানীয় ছফির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গরীব এলাকা। আমরা স্থানীয়রা কিছু টাকা তুলে শিশুটির চিকিৎসার জন্য দিয়েছি। কিন্ত এই অল্প টাকা দিয়ে তার ওষুধ কিনা-ই ঠিকমতো হচ্ছে না। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, সরকার যেনো এই অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ায়। শিশুটির চিকিৎসায় এগিয়ে আসে।’
গালিবের বাবা জামান কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘চোখের সামনে পুতের এই কষ্ট দেখে আর সহ্য করতে পারছি না। নিয়মিত ওষুধ না খাওয়ালেই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে শরীর নীল হয়ে যায়। ডাক্তার বলছে তাড়াতাড়ি অপারেশন করতে হবে। অপারেশন করতে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাগবো। শত অভাবেও কোনদিন কারও কাছে হাত পাতিনি, এহন পাততে অইল। আমার এই মাছুম বাচ্চাকে বাঁচাতে কেউ যদি এগিয়ে আসতো তার জন্য আল্লাহর কাছে দু’হাত তুলে দোয়া করতাম।’
স্থানীয় ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তাফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘শিশুটি আমার ওয়ার্ডের। তার বাবা দিনমজুরি কাজ করে সংসার চালান। তার হার্টের অপারেশন করতে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাগবে। আমাদের পরিষদের পক্ষ থেকে যদি কোন সহযোগিতার সুযোগ থাকে সে চেষ্টা করে দেখবো। সরকার যদি এই শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় তবে তার জীবনটা বেঁচে যেতো। সরকারের কাছে দাবি থাকবে এই অসহায় শিশুটির পাশে যেনো দাঁড়ায়। ‘
ছেলের চিকিৎসা সহায়তার জন্য গালিবের বাবা জামান সবার প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। আর্থিক সহায়তা পাঠাবার বিকাশ/নগদ নম্বর: ০১৭৫৯২৭২৭৬৮ (পারসোনাল/গালিবের বাবা মোঃ জামান)।
তারিখ-০৫/০৬/২০২৪
সাইফুল আলম তুহিন
০১৭৩৭-৭২৮২৪১