আর্থিক টানাপোড়েনের সংসারে প্রায় ২ বছর আগে রংপুর মহানগরী থেকে কিশোরী ঝর্ণা (ছদ্দনাম) বাড়ী থেকে বের হয়ে ঢাকায় একটি গার্মেন্টেস চাকরী করতে আসে; জনৈক সাগর নামে এক ব্যক্তি তাকে ভালো বেতনের চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত পানি পান করিয়ে মেয়েটিক অজ্ঞান করে এবং টাকার বিনিময়ে ময়মনসিংহ যৌন পল্লীতে বিক্রয় করে দেয়। আরেক কিশোরী জবা (ছদ্দনাম) সৎমায়ের পরিবারে অসম্মান সহ্য করতে না পেরে প্রায় ১ বছর ৪ মাস আগে বাড়ী থেকে ঢাকা এলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাকে একটি বিউটি পার্লারে চাকুরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ময়মনসিংহ যৌন পল্লীতে বিক্রয় করে দেয়। সৎ মায়ের সাথে রাগ-অভিমানের বশবর্তী হয়ে প্রায় ১০ মাস আগে তিথি (ছদ্দনাম) নামের আরেক কিশোরীও একই পরিণতি বরণ করে ময়মনসিংহে যৌনপল্লীতে আসেন।
গত ৯/১/২০২৫ তারিখ তাদের মধ্যে একজন কিশোরী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে সুকৌশলে তার মায়ের মোবাইলে যোগাযোগ করতে সক্ষম হলে তার মা-বাবা সেদিনই পুলিশ সুপার,ময়মনসিংহ মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং মেয়েটিকে পরিবারে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পুলিশ সুপার, ময়মনসিংহ মহোদয়ের সহৃদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তাৎক্ষনিভাবে পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা,ময়মনসিংহ একটি টিমকে কোতোয়ালী থানাধীন রমেশ চন্দ্র সেন রোডস্থ পতিতা পল্লীতে গিয়ে উক্ত ভিকটিম ও তার সাথে অপর দুই হতভাগ্য কিশোরীকে উদ্ধার করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে আসেন।
উদ্ধারকৃত ভিকটিমরা পতিতাবৃত্তির অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে আবারও সুস্থ সামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশে ফিরে যাওয়ার জন্য ইচ্ছা পোষণ করে এবং তাদেরকে এখানে আনা সম্পর্কে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করবে না বলে অবহিত করলে পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে তাদেরকে স্ব-স্ব পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। তাদেরকে ফিরে পেয়ে অশ্রুসিক্ত পিতামাতার হৃদয়ে প্রশান্তির আবেশ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ সুপার, ময়মনসিংহ মহোদয়ের এই আন্তরিকতা সমাজের সর্বস্তরে ইতিবাচকতার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুক- জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এই আশা প্রকাশ করা যাচ্ছে।