মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন

ত্রিশালের বাগান মাদ্রাসায় নিয়ম বহির্ভূত শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে পরিচালনা করার অভিযোগ‌ তদন্তে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর

রির্পোটারের নাম
  • প্রকাশ: সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪
  • ১৩৮ দেখা হয়েছে :

স্টাফ রিপোর্টার :

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাগান ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় বিভিন্ন অনিয়ম ও নিয়ম বহির্ভূত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।এসব শিক্ষকদের তথ্য দিয়ে পরিদর্শন ও নিরীক্ষন অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিদর্শক মোঃ মুকিব মিয়ার নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করেন অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা,দাতারা।গত বুধবার (২৬ জুন) বাগান ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় পরিদর্শনকালে শিক্ষা পরিদর্শক মোঃ মুকিব মিয়ার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয় অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোঃ আলাউদ্দিন,দাতা সদস্য মঞ্জুরুল হক সরকার,ফেরদৌসী বেগম,গভর্নিং বডির সাবেক নির্বাচিত সদস্য শাহিন আলম। অভিযোগে উল্লেখ করে বলেন, ১/ অবৈধভাবে অধ্যক্ষ পদ থেকে আনোয়ার সাদত কে সরানোর বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টের রিটপিটেশন নং ১৬৩৬৭/২০১৭,ত্রিশাল সহকারি জজ আদালতে অন্য প্রকার মোকদ্দমা ৩০৩/১৬ চলমান। ২/অধ্যক্ষ পদে মোঃ ফয়জুর রহমানকে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে গোপনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।ফয়জুর রহমানকে প্রথম সহকারি মৌলভী পদে বাগান ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসায় তার পিতা অত্র প্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ আসাদুল হক তাহার চাকরির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন না নিয়ে আর ছেলেকে অবৈধ ভাবে গোপনে নিয়োগ দেয়। তখন সহকারি মৌলভী পদ শুন্য ছিল না।স্থানীয় পত্রিকায় গোপনে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মহাপরিচালক এর প্রতিনিধি আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষকের পরিবর্তে গফরগাঁও সরকারি হাই স্কুলের শিক্ষক দেখিয়ে তাহার স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ দেয়া হয়।পরবর্তীতে এলাকাবাসী অভিযোগ করলে তদন্তের মাধ্যমে তার নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করা হয়।পরবর্তীতে গভর্নিং বডির অনুমোদন সাপেক্ষে অধ্যক্ষ তার নিয়োগ বাতিল করেন।
পরে তিনি অধ্যক্ষের অভিজ্ঞতা সনদ জাল করে মাত্র ৪ বৎসরের অভিজ্ঞতা নিয়ে গোপনে কোন প্রকার পরীক্ষা ছাড়াই বাপুপুর নীলের বাজার দাখিল মাদ্রাসায় সুপার পদে নিয়োগ নেন।সেখান থেকে গোপনে ত্রিশাল সহকারী জজ আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও গোপনে নিয়োগ নিয়ে এমপিওভুক্ত হন।তাহার বিরুদ্ধে বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মারার অভিযোগে গ্রেফতার হয় এবং উক্ত মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছে এবং আদালতে বিচারাধীন।
৩/সহকারী অধ্যাপক(প্রভাষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান)শাহনাজ বেগম:-স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি নেই তিনজন প্রার্থী পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও প্রথম স্থান অধিকারী প্রার্থীকে অযোগ্য দেখিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী শাহনাজ বেগমকে নিয়োগ দেয়া হয়।অথচ ইসলামের ইতিহাসের বিষয়ে প্রভাষক নিয়োগ।তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন।১১/০২/২০০১ তারিখে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি থেকে যোগদান পর্যন্ত ৬ মাস ২৫ দিন অতিবাহিত হয়।পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের পর্যাপ্ত সময় দেয়া হয়নি। ৩/প্রভাষক (বাংলা) হোসনে আরা বেগম :-তাহাকে অত্র প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়ার জন্য পরপর দুইবার নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়।প্রথমবার অনার্স ৩য় বিভাগ থাকার কারণে নিয়োগ দেয়া হয়নি।এমএ পাস করার পর ও পুনরায় অনার্স পরীক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় বিভাগ পায় এবং পূর্বের এমএ পাস সনদ বহাল রেখে নিয়োগ নেয়।স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আছে,জাতীয় পত্রিকায় নেই।পত্রিকার বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময় দেয়া হয়েছিল মাত্র ছয় দিন।নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিবের চাকরির মেয়াদ ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পরেও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন ব্যতীত অবৈধভাবে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্বে থেকে তাকে নিয়োগ দেয়। ৪/প্রভাষক +জীব)নুরজাহান আক্তার:-তাহার নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়নের কোন চিঠি নেই।মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে তাহার ননদের স্বামী আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সহকারী অধ্যাপক জাকির হোসেন ডিজির প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেন এবং নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই তাকে নিয়োগ দেয়া হয়।জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি নেই। স্থানীয় পত্রিকার বিজ্ঞপ্তিতে পর্যাপ্ত সময় দেয়া হয়নি।বিজ্ঞপ্তির সাত মাস আট দিন পর তিনি যোগদান করেন।তিনজন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও একজনের আবেদনের শিক্ষাগত যোগ্যতাই ছিল না।বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড প্রভাষক জীববিজ্ঞান পদে নিয়োগের অনুমোদন দেয়ার পূর্বেই তাকে নিয়োগ দেয়া হয়।গভর্নিং বডি নিয়োগ অনুমোদন না দিলেও সুকৌশলে ফ্রুট কালি ব্যবহার করে অন্যের নাম পরিবর্তন করে তার নিজের নাম লিখে নিয়োগ নেন।উচ্চতর স্কেলের সময় না হলেও গভর্নিং বডির অনুমোদন ব্যতীত উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হয়।অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে এবং মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ও দায়িত্ব পালন করে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের সময় তার বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার দুর্নীতির তদন্ত চলছে।
৫।প্রভাষক(গণিত)আবুল কালাম আজাদঃ-জাতীয় পত্রিকায় কোন বিজ্ঞপ্তি নেই, ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়নে কোন চিঠি নেই।১৬/১/২০০৪ এ স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১২/৬/২০০৪ এ যোগদান দেখানো হয়েছে।মূলত ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ নেওয়া হয়েছে। ৬।প্রভাষক(ইংরেজি) হাবিবুল ইসলাম:- সপ্তাহে দুই দিন প্রতিষ্ঠানে আসেন।
৭/প্রভাষক (পদার্থ) এনামুল হক:-পূর্বের প্রতিষ্ঠানের ভূয়া অভিজ্ঞতা সনদ দিয়ে নিয়োগ নিয়েছে। ৯/নার্গিস আফরোজ,সহকারী শিক্ষক( জীব)অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করে নজরুল কলেজে দুই বছর চাকরি করে পুনরায় অবৈধভাবে চাকরি করছেন। ১০।গোলাম মোস্তফা(সহকারী মৌলভী)নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়ে এমপিও ভুক্ত নজরুল ইসলামকে জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত্ত করে ওই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ কমিটি ও গভর্নিং বডির রেজুলেশন,নিয়োগ পত্র,যোগদান পত্র জাল করে অবৈধভাবে নিয়ে নিয়েছেন।১১/একেএম আব্দুর রাজ্জাক,সহকারী শিক্ষক (কৃষি) ১০ অক্টোবর ১৯৯৬ সালে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মাত্র দুই দিনের সময় দিয়ে ১২ অক্টোবর ১৯৯৬ সালে আবেদনের শেষ সময় দিয়ে ১৭ অক্টোবর ১৯৯৬ সালে নিয়োগ অনুমোদন দেখানো হয়।বিজ্ঞপ্তি থেকে নিয়োগ অনুমোদন পর্যন্ত সময় দেখানো হয় মাত্র সাত দিন।তাহার নিয়োগ পরীক্ষায় দুইজন প্রার্থী ছিল।তাহার বড় ভাইয়ের শশুরের বড় ভাই হযরত আলী নিয়োগ কমিটির সদস্য হিসেবে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার কারে তাকে নিয়োগ দেয়।তিনি বিএসসি পাশ করে বিএড ছাড়াই কৃষি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।
১২/সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে রিপিটিশন নং ৮৮৭৪/২০১৯,সহকারী মৌলভী হেলেনা খাতুনের রিটপিটিশন নং ৪১৪৬/২০১৯,ইবঃ শিক্ষক সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে রিটপিটিশন নং ৩২৭৮/ ২০১৯ মহামান্য হাইকোর্টে বিচারাধীন এবং অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকা অবস্থায় তাদের যোগদান এবং এমপিওভুক্ত করা হয়। ১৩/উপাধ্যক্ষ এবং চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ না দেয়ার জন্য ত্রিশাল সহকারি জজ আদালতে মোকদ্দমা রয়েছে এবং মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন নং ৫৫৪৮/১৮ এর আদেশ অমান্য করে নুরজাহান আক্তারের মাধ্যমে গোপনে কমিটি করে নিয়োগ দেয়া হয়।কমিটি বাতিলের জন্য মহামান্য হাইকোর্ট এবং ত্রিশাল সহকারি জজ আদালতে মোকাদ্দমা বিদ্যমান। ১৪/আনছারুল হক( ইব: প্রধান),আব্দুল্লাহ (ল্যব/গবেষণার),আছমা আক্তার(আয়া)পদে কোন প্রকার নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে গভর্নিং বডির সাবেক নির্বাচিত সদস্য শাহিন আলম বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের কোন কার্যক্রমই সঠিক না। বর্তমান অধ্যক্ষ এর আগে অত্র প্রতিষ্ঠানে সহকারী মৌলভী হিসেবে অবৈধভাবে যোগদান করেছিল। আমাদের নির্বাচনের পর এখানে আর কোন নির্বাচন হয়নি। নির্বাচন ছাড়াই তারা কমিটি করে অবৈধভাবে নিয়োগ দিচ্ছে।
এ বিষয়ে বাগান ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফয়জুর রহমানকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছু বলতে নারাজ। পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিদর্শক মোঃ মুকিব মিয়ার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ‌ বিষয়ে একটি অভিযোগ আমার কাছে দিয়েছে তারা। এ জন্য ঘটনার তদন্ত চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধভাবে যদি নিয়োগ দিয়ে থাকে তাহলে রিপোর্টে তা আসবে।বেআইনীভাবে নিয়োগ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category



© All rights reserved ©  রংধনুটিভি ২০২৪
ESA IT BD Software Lab Trishal