ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শিক্ষিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে আব্দুর রাশিদ ও আবু রায়হান নামে গৌরীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সহকারী শিক্ষা অফিসার আহত।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই)গৌরীপুরে এই ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়,গৌরিপুরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাশিদ’র সঙ্গে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার সঙ্গে প্রেমের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। প্রেমের সম্পর্ক চলাকালে প্রায় ৫ মাস পূর্বে ওই শিক্ষিকাকে বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে প্রস্তাব দিয়েছিলেন আব্দুর রাশিদ। তখন এই বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন ওই শিক্ষিকার পরিবারের লোকজন। এদিকে শুক্রবার (৫ জুলাই) ওই শিক্ষকের পারিবারিকভাবে অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল।
এ বিষয়ে খবর পেয়ে বিয়ে বন্ধ করতে বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষিকার বাসায় যান প্রেমিক আব্দুর রাশিদ। এসময় আব্দুর রাশিদের সঙ্গে ছিলেন আবু রায়হান। এ নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ওই শিক্ষিকার পরিবারের সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে দুই শিক্ষা কর্মকর্তাকে মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হন আবু রায়হান। এসময় স্থানীয় লোকজন আহত আবু রায়হানকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
শিক্ষিকার বাবা সাংবাদিকদের বলেন,আমার মেয়েকে বিয়ের জন্য ৫/৬ মাস পূর্বে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাশিদ পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাবে আমার সন্তানরা দ্বি-বিভক্ত মতামত দেয়ায় বিয়ের প্রস্তাবটি নাকচ হয়। এরপরে আমার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব আসলেই তিনি বিয়ে ভেঙ্গে দিতেন। শুক্রবার আমার মেয়ের অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। এই বিয়ে বন্ধ করতে আবু রায়হানকে সঙ্গে নিয়ে আব্দুর রাশিদ আমার বাসায় আসেন। তখন আমি বাসায় ছিলাম না। এসময় ছেলেদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে হয়ত ঘরের কোন স্থানে আবু রায়হান সাহেব আহত হয়েছে। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।
আহত সহকারী শিক্ষা অফিসার আবু রায়হান সাংবাদিকদের বলেন, ওই শিক্ষিকার বিয়ে অন্যত্র ঠিকঠাক হয়ে যাওয়ায় বুধবার রাতে শিক্ষিকার বাবাকে ফোনে বিয়ের প্রস্তাব দেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাশিদ। শিক্ষিকার বাবা তাকে বাসায় এসে এ বিষয়ে কথা বলার আমন্ত্রণ জানান। শিক্ষিকার বাবার আমন্ত্রণের বরাতে বৃহস্পতিবার আব্দুর রাশিদের সঙ্গে আমিও গিয়েছিলাম। শিক্ষিকার বাসায় এ বিষয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা আমার ওপর হামলা চালায়। এতে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রচণ্ড আঘাত পাই। এসময় মারধরের শিকার হন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাশিদও। তবে তিনি মারধরের বিষয়টি চেপে যান।
এ ঘটনায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাশিদ জানান,সহকারী শিক্ষিকার সঙ্গে বিয়ের বিষয়ে তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রস্তাব দেন। এরপরে এ নিয়ে আলোচনা চলছিলো। প্রেমের কোনো বিষয় না, মেয়েটা আমাকে একটু ভালোবাসে। সে জন্য তার বাবাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ছিলাম। বাসায় ডেকে এনে আমাদের ওপর হামলা-মারধর করবে,এটা অত্যন্ত দু:দুঃখজনক।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ ও গৌরীপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইমরান আল হোসাইন। তারা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঞ্জুমান আরা বেগম সাংবাদিকদের জানান, ঘটনা শুনেছি। তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আমি জানি না।