বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে নিজের বোন শেখ রেহেনা কে সাথে নিয়ে ভারতে পাড়ি দেন।হঠাৎ করে তিনি পালিয়ে গেলেও ভয়াবহ বেকায়দায় পড়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী,দুর্নীতিবাজ নেতারা।কেও কেও সুযোগ বুঝে দেশ ছাড়তে পারলেও আটকে পড়ে গিয়েছেন অনেক এমপি-মন্ত্রী।
তাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সদ্য গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা নৌপথে পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন মিয়ানমার-ভারত,সুবিধা করতে না পেরে বঙ্গোপসাগরে সাতদিন ভেসে ছিলেন। পরে গত ১৩ আগস্ট পালানোর সময় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা গ্রেফতার হন তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়,গত ৫ আগস্ট বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকার চারপাশের ভয়ংকর অবস্থা বুঝতে পারেন সালমান এফ রহমান। বিমানবন্দরসহ সব জায়গা থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে উত্তরার নিজের মালিকানাধীন একটি জুট মিলে যান।সেখানে গিয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করতে মুখভর্তি সফেদ সাদা দাড়ি নিজেই কাটেন। সেখানে বেক্সিমতো গ্রুপে কর্মরত নৌবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে নৌপথে দেশ ছাড়ার পরামর্শ দেন। সেই কর্মকর্তাই মোটা অঙ্কের টাকায় তাকে ম্যানেজ করে দেন একটি ইঞ্চিনচালিত ট্রলার। রাজধানীর ৩০০ ফুট সড়কের কাঞ্চন ব্রিজ এলাকা থেকে ওই ট্রলারে চড়েন সালমান। সঙ্গে নেন স্যাটেলাইট ফোন, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, প্রয়োজনীয় সামগ্রী। সঙ্গী হিসেবে ডেকে নেন তার ঘনিষ্ঠজন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে। নৌযানটি চলে যায় সোজা ভোলায়। যাওয়ার সময় মাঝ পথ থেকে সঙ্গে নেয়া হয় যাবতীয় খাদ্য ও জরুরি সামগ্রী।
টানা সাত দিন বঙ্গোপসাগরে ভাসতে থাকেন তারা। সুযোগ খুঁজতে থাকেন মিয়ানমার পাড়ি দেওয়ার। মাঝখানে ভারতে পাড়ি দিতে সুন্দরবনের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকার কাছাকাছি পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তবে পরিস্থিতি সুবিধাজনক মনে না হওয়ায় নৌকার সারেং ফের ফিরে আসেন ভোলা এলাকায়। সিদ্ধান্ত নেন মিয়ানমার পাড়ি দেবেন।
কোস্টগার্ড সদস্যরা শুরুতে সালমানকে চিনতে পারেননি বলে দাবি করেছেন সালমান। তিনি বলেছেন, শেভ করার পর তিনি নিজেই নিজেকে চিনতে পারছিলেন না। কোস্ট গার্ডের সদস্যরাও তাকে শুরুতে চিনতে পারছিলেন না। তারা প্রথমে আনিসুল হককে চিনে ফেলেন। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আনিসুলই কোস্ট গার্ডের সদস্যদের সালমানকে চিনিয়ে দেন।
গত ১৪ নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হকের দশ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।