চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৩ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের নিজামপুর কলেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় আটজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষে এক পক্ষের আহতরা হলেন- উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা আরমান হোসেন (২০), মোহাম্মদ সুমন (৩৪), এমরান হোসেন (২২), মফিজুল ইসলাম (৩৪), শহীদুল্লাহ খানসাব (৬০)।
অন্য পক্ষের আহতরা হলেন- যুবদল কর্মী ইমন (২১),. যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন (৩৫), ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান ইমাম (৪৫), ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেন (২৬), সদস্য টিটু (৩৫)।
ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি গোলাম রহিম চৌধুরী স্বপন বলেন, বৃহস্পতিবার নিজামপুর বাজারে যুবদল কর্মী আরিফ শ্রমিকদল কর্মী মুরাদকে মারধর করে। এ বিষয়ে শুক্রবার যুবদল কর্মী টিটু আরিফকে জিজ্ঞেস করতে গেলে টিটুকেও আরিফের লোকজন মারধর করে আটকে রাখে। এসময় খবর পেয়ে অন্যনেতাকর্মীরা গেলে তাদেরও হামলা করেছে। এতে আমাদের সাতজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অন্যদিকে আরিফ জানান, সপ্তাহখানেক পূর্বে ফয়সল নামের এক যুবককে ৫০ পিস ইয়াবা সহ আটক করে সিএনজি চালক সুমন। পরে বিষয়টি মিটমাট ও সমঝোতা হয়ে যায় স্থানীয়ভাবে। কিন্তু এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার রাতে সুমনের সিএনজি ভাড়া করে মিঠাছড়া বাজারে যাওয়ার কথা বলে চরারকুল তুলাতলি নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে মারধর করে ফয়সালের লোক মামুন সহ কয়েকজনে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরেরদিন শুক্রবার সকালে সুমনের লোক আরিফ সহ বেশ কয়েজনে মিলে ফয়সালের লোক বেলাল, মুরাদ ও পরে টিটুকে মারধর করে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি নেতা স্বপনের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে এমন হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাঁর নেতৃত্বে ফরফরিয়া গ্রামের শামলাসি বাড়িতে ঘরে ঢুকে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের কুপিয়েছে। মহিলাদের উপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আরমান নামে এক যুবদল কর্মীর পেটে চুরি ঢুকিয়ে দেয় এবং ছেলেকে বাঁচাতে আসলে বাবা খানসাবকেও মারধর করে। আরমানের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। মূলত স্বপন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মাহমুদা জানান, মারামারির ঘটনায় আহত অবস্থায় পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের মধ্য চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে। আতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের সবার মাথা, হাত, পেট, কোমরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের বলেন, নিজামপুর এলাকায় মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ দ্রত ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।