মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন

এবার ভারতের সংসদে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠানোর প্রস্তাব

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৪১ দেখা হয়েছে :

এবার ভারতের সংসদে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠানোর প্রস্তাব

বাংলাদেশ ইস্যুতে ৩ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার)সরগরম ভারতের সংসদের অধিবেশন। বিধানসভার পরে এবার লোকসভায় শান্তিবাহিনী পাঠানোর জন্য জাতিসংঘকে অনুরোধ জানাতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের এমপিরা। প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তারা। অন্যদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও অনুপ্রবেশ ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন রানাঘাটের বিজেপির এমপি জগন্নাথ সরকার।

আদানি ইস্যুতে গেল সপ্তাহে বারবার মুলতবির পর মঙ্গলবার পুনরায় শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। এদিনও আদানি ঘুষকাণ্ড নিয়ে সরব হয়ে মুলতবি প্রস্তাব পেশ করে বিরোধীরা। এরপরেই সংসদ থেকে ‘ওয়াক আউট’ করে তারা। কিন্তু লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার উদ্যোগে পুনরায় শুরু হয় শীতকালীন অধিবেশন। শর্ত ছিল দুটি বিষয়ে কথা বলতে দিতে হবে বিরোধীদের। এক বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার ও দুই উত্তরপ্রদেশের সম্বল মসজিদ কাণ্ড। সেই মতোই এই দিন সংসদে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু এবং হিন্দুদের উওপর অত্যাচার নিয়ে বক্তব্য রাখেন উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার লোকসভায় বাংলাদেশ ইস্যুতে মুখ খুলেই তৃণমূল নেত্রীর দেখানো রাস্তা ধরেন তৃণমূল এমপি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল রাজ্য বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দাবি জানান, এদিন লোকসভায় সেই দাবিই তুলে ধরেন সুদীপ।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চলছে, খুন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী, আমাদেরই রাজ্যের লাগোয়া। আমাদের আবেদন, বাংলাদেশে অবিলম্বে শান্তি বাহিনী পাঠানোর জন্য ভারত সরকার রাষ্ট্রপুঞ্জে (জাতিসংঘ) আবেদন জানাক। ভারত সরকার একেবারে নিশ্চুপ। তার কারণ সরকারই ভালো জানে। আমাদের মু্খ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই মেনে নেব আমরা, একসঙ্গে কাজ করব। অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, বাংলাদেশ থেকে শরণার্থীরা সীমান্ত পেরিয়ে আমাদের রাজ্যে ঢোকেন। সরকারকে এ নিয়ে অবস্থান জানাতে হবে। বিদেশমন্ত্রী সংসদে এসে এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিন।

তৃণমূলের আরেক এমপি কীর্তি আজাদ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে ঠিক বলেছেন। ভারত সরকার কী করছে? ওরা (বাংলাদেশ) আমাদের প্রতিবেশী। সেখানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। সরকার কিছু না করে… আমাদের নেত্রী ঠিকই বলেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপ করা উচিত।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বর্তমান উদ্বেগের জন্য মমতা সরকারকেই দায়ী করেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তাঁর বক্তব্য, বাংলাদেশে বেছে বেছে হিন্দুদের নির্যাতন করা হচ্ছে। মন্দির ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, আর্থিক তছরুপ হচ্ছে, রাতের বেলা ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে ইসলামে। কাঁটাতারের বেড়া মধ্যে অত্যাচারিত হতে হচ্ছে। এপারে এসেও শান্তি নেই। দিনের পর দিন অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে আমাদের জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে। সরকারি মদতেই হচ্ছে। তছনছ হচ্ছে সরকারি সম্পদ। ভাঙা হচ্ছে মন্দির। বেলডাঙা, হাওড়া, উলুবেড়িয়ার মতো জায়গায় সরকারি মদতে দাঙ্গা ছড়াচ্ছে।

রাজ্যসভায় মমতা সরকারের দিকে আঙুল তোলেন বিজেপি-র শমীক ভট্টাচার্যও। তিনি আরও মারাত্মক অভিযোগ তোলেন। শমীক বলেন, সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, ভারত সরকারের পরমাণু বিভাগের অধীনে রয়েছে। এর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ওই কেন্দ্র হাই সিকিওরিটি জোন বলে বিবেচিত হয়। অথচ উত্তরের দেয়ালের বাইরে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা এসে ভিড় জমিয়েছেন। সব বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা এমন এক রাজ্যে রয়েছি, যেখানে অনুপ্রবেশকারীদের স্বাগত জানানো হয়। দুই হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানাই। পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের বাইরে রোহিঙ্গারা বসে থাকলে, আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছি, তা নিয়ে ভাবনার অবকাশ রয়েছে। পুলিশের কাছে চার চার বার গেলেও সে নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। রাজ্যের সরকারের জন্যই আজ এমন পরিস্থিতি রাজ্যের সরকার অনুপ্রবেশে অনুপ্রেরণা জোগায়। বাংলাদেশের কথা পরে হবে। প্রতিদিন যে অনুপ্রবেশকারীরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ছে, দেশের জাতীয় নিরাপত্তা যে প্রশ্নের মুখে, তার জন্য দায়ী রাজ্য সরকার।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category



© All rights reserved ©  রংধনুটিভি ২০২৪
ESA IT BD Software Lab Trishal