আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর রায়পুরায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে জেলার রায়পুরা উপজেলার মেথিকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- রায়পুরার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের চাঁন্দেরকান্দি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মানিক মিয়া (৫০) ও একই এলাকার আবু খালেক মিয়ার স্ত্রী ও চাঁন্দের কান্দি ইউনিয়নের সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য কল্পনা বেগম (৪২)। তারা আবিদ হাসান রুবেলের সমর্থক।
আহতরা হলো- জুয়েল (৩০), রাব্বি (২২), সাব্বির (৩৮), আমির হোসেন (২১), টুটুল (৩৫), বাদল ভেন্ডার (৫৫), মারুফ মিয়া (১৫), সুফিয়া বেগম (৩৮)।
পুলিশ জানায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজুর এক সময়ের সমর্থক যুবলীগ নেতা আবিদ হাসান রুবেলের সঙ্গে তার অপর সর্মথক বাসেত মেম্বারের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে এই দ্বন্দ্ব আর বেড়ে যায়। এরই জেরে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার গুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সব সংঘর্ষে একাধিক ব্যক্তি আহত-নিহত ও মামলা পাল্টা মামলা হয়। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে প্রচারণা চালানোর সময় প্রতিদ্বন্দ্বী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করেন যুবলীগ নেতা আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকরা।
এ ঘটনায় রুবেল গাঁ ডাকা দেন। সম্প্রতি মামলায় জামিন নিয়ে এলাকায় এসে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান। এতে প্রতিপক্ষ বাসেত মেম্বার গ্রুপের সমর্থকরা বাধা দেন। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
সর্বশেষ আজ শনিবার ভোরে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় প্রতিপক্ষ হামলা চালিয়ে আবিদ হাসান রুবেল এর সমর্থক মেম্বার মানিক মিয়াকে মাটিতে ফেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পা কেটে ফেলেন। পরে প্রতিপক্ষরা পা নিয়ে উল্লাস করেন। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে চাঁন্দের কান্দি মহিলা ইউপি সদস্য কল্পনা বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে জোড়া হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খান নুরউদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। এছাড়া আহত ছয়জন চিকিৎসা নিয়েছেন।
নরসিংদী পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে এ ঘটনা ঘটে। এই মুহূর্তে এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।