ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্ব বর্তেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাঁচ সদস্যের একটি দলের ওপর।
বুধবার দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনকে প্রধান করে এ অনুসন্ধান দল গঠন করার কথা বলেছেন জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা।
ওই কর্মকর্তা বলেন, এ দল শেখ হাসিনাসহ অন্য বিরুদ্ধে ওঠা দুটি দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করবে। অনুসন্ধানের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে এ কাজ শেষ করতে হবে।
দলের অন্য সদস্যরা হলেন- উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, এস. এম. রাশেদুল হাসান ও এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর।
দুদকের পাঁচ সদস্যের এ দল আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকারের আট প্রকল্পে শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ওঠা ২১ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করবে।
একই দল অনুসন্ধান করবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ।
এসব দুর্নীতিতে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখবে দুদক বলে মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে হাই কোর্ট রুল জারির দুই দিন পর দুদকের পক্ষ থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
অনুসন্ধান দল গঠনের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এ বিষয়ে কমিশনের অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এ দল গঠন করা হয়েছে।
দুদক বলছে, আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকারের আট প্রকল্পে ২১ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছে কমিশন।
এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছে দুদক।
এসব দুর্নীতিতে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। মঙ্গলবার দুদক চেয়ারম্যান আবদুল মোমেনের নেতৃত্বে কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে দুর্নীতির ওই অভিযোগ কমিশনের গোচরে এনেছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।
আর আশ্রয়ণ প্রকল্প, বেজা ও বেপজার আট প্রকল্প বাস্তবায়নের আড়ালে ‘২১ হাজার কোটি টাকা লোপাটের’ অভিযোগটি এসেছে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে।
প্রবল গণ আন্দোলনে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসন অবসানের পর গত ৫ অগাস্ট পালিয়ে ভারতে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় বোন শেখ রেহানাও তার সঙ্গে ছিলেন।
হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। আর রেহানার মেয়ে টিউলিপ যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ‘গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটনের অভিযোগে হাসিনা, রেহানা ও জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া আন্দোলনের সময় হত্যার কয়েক ডজন মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগের সময়ে ব্যাপক দুর্নীতির যেসব অভিযোগ বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে, সে বিষয়ে তদন্ত বা অনুসন্ধানের উদ্যোগ এটাই প্রথম।