ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার বীররামপুরে জেওসি বিডি গার্মেন্টস কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় একের পর একজন করে শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ছে। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত(ওভারটাইম) সময়ের কাজে কারখানায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।পরে কারখানাটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
১২ মার্চ বুধবার সকাল ১১ টার পর থেকে অসুস্থ বোধ করতে শুরু হলে একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়ে।পরে ১৩ জনকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাদের অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে রেফার করা হয়। তাদের মধ্যে ১০ জন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কারখানায় কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের সূত্রে জানা যায়,দুপুর থেকে অসুস্থবোধ করতে থাকেন শ্রমিকরা। শ্রমিকেরা প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের কাজ করার পর রাত ১০টা পর্যন্ত ওভারটাইম করেন।ওভারটাইমের সন্ধ্যার পর হঠাৎ শ্রমিকেরা অচেতন হয়ে পড়তে থাকে।এসময় ১৩ জনকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুত্রে জানা যায়,শ্রমিকেরা দুপুর ১২টা থেকে অসুস্থবোধ করলে কারখানার চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।তাদের শরীরে চিনির পরিমাণ কমে যাওয়া,গরমের কারণে পানিশূন্যতা থেকে এমনটি হতে পারে।তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
বিজ্ঞাপন
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়,রাতে হাসপাতালের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ জন শ্রমিককে ভর্তি হয়। তাঁদের অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। রাত ১২টার পর শ্রমিকেরা কিছুটা সুস্থতা অনুভব করতে থাকেন। চিকিৎসাধীন শ্রমিকদের সূত্র জানায় তাঁরা কারখানায় সকাল সাতটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করেন। সকালে কাজ শুরুর পর বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে কারখানার মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়।দুপুরের পর আরও কয়েকজন অচেতন হয়ে পড়েন। ইফতারের পর অন্যরা অসুস্থ হতে থাকলে কারখানা ছুটি দেওয়া হয়। আগে দু-একজন অসুস্থ হলেও এভারের মত পরিস্থিতি কোনো দিন হয়নি।
কারখানার দায়িত্বশীল সূত্রে জনা যায়‘ডিউটির চাপ একটু বেশি ছিল। রোজায় অনেকের শরীর দুর্বল ছিল। দুপুরের পর দু-তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের ছুটি দেওয়া হয়। ইফতারের পর আরও ১০ জন অসুস্থ হলে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করি। তাঁরা এখন সুস্থ। খাবার বা অন্য কোনো কারণ থেকে এ সমস্যা হয়নি।’ তিনি বলেন, শ্রমিকেরা কারখানায় গেলেও পরিস্থিতির কারণে বিশ্রামের জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে।
মচিমহার সহযোগী অধ্যাপক এমদাদ উল্লাহ খান বলেন, ১০ জন নারী শ্রমিক ভর্তি হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগের বয়স ২০ থেকে ২২। সবার একই ধরনের উপসর্গ ছিল। সাইকোলজিক্যাল ইলনেস থেকে শ্রমিকদের এমন হয়েছে। তবে তদন্ত করলে প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে।
ময়মনসিংহের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।