মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরে নিহত হয় আফনান,প্রবাসে মারা গেছেন পিতা,মামলা করে বিপাকে মা-বোন

রির্পোটারের নাম
  • প্রকাশ: বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪
  • ৭০ দেখা হয়েছে :

রংধনু ডেক্স

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় লক্ষ্মীপুরে নিহত হয় আফনান পাটওয়ারী।তার মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে এখম পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অভিযুক্তদের হুমকিতে এখন প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, বাসায় তালা ঝুলিয়ে অন্যস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। হুমকিদাতা সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে, সিলেটের গোলাপগঞ্জেই নিহত হয়েছেন সাতজন। সেই উত্তাল পরিস্থিতিতে তারা কোনো মামলা করতে পারেননি নিহতদের পরিবার। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার সম্মিলিত এজাহার তৈরির প্রস্তুতি চলছে।

লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হয়েছেন আফনান পাটওয়ারী ও সাব্বির আহমেদ। সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে থানায় মামলা করেছেন তাদের স্বজনরা। অভিযুক্তরা হুমকি দিচ্ছেন বলে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।

সরেজমিন শহরের বাস টার্মিনাল এলাকার আরমান মিঝি মসজিদ বাড়ি এলাকায় আফনানের বাড়ি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের সঙ্গে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ঝুলছে। আশপাশের লোকজন বলছেন, তারা বাড়িতে নেই, ভয়ে বাড়ি ছেড়েছেন আফনানের মা ও একমাত্র বোন। পরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আন্দোলনের কর্মীদের নিরাপত্তা সহায়তায় তারা বাড়ি ফেরেন। এ সময় আফনানের সহপাঠীদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা ও বোন। আফনান লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে (চলমান) এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।

এ সময় আফনানের মা নাছিমা আক্তার বলেন, তিন মাস আগে আমার স্বামী সালেহ আহমদ বিদেশে মারা গেছেন। সেই শোক সইতে না সইতে আমার ছেলেকে হারালাম। তারা (সন্ত্রাসীরা) আমার ছেলেকে গুলি করে মেরেছে। আমরা মামলা করেছি, এখন তারা ফোন থেকে আমাদের ও আত্মীয়স্বজনদের হুমকি দিচ্ছে মামলা তুলে নিতে। ক্ষমতা হারানোর পরও সন্ত্রাসীদের দাপট। এমন পরিস্থিতিতে কার কাছে যাব আমরা।

আফনানের বোন জান্নাতুল মাওয়া বলেন, তিন মাসের ব্যবধানে বাবা ও ভাই হারিয়েছি। ভাই হত্যার কঠোর বিচার চাই।

আফনানের সহপাঠীরা সে দিনের ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে বই খাতার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন আফনান। হঠাৎ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালায়। সহপাঠী এক শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় আফনান।

অন্যদিকে, আন্দোলনে নিহত আরেকজন সাব্বির হোসেন রাসেল। শহরের মনির উদ্দিন পাটোয়ারীর নানার বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করত সে। ৪ আগস্ট আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সাব্বির। তার নানার বাড়িতে এখনো চলছে শোকের মাতম। ১৪ মাসের শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে সাব্বিরের স্ত্রী তর্না আক্তার, বয়োবৃদ্ধ মা-বাবাসহ সবাই বাকরুদ্ধ।

তর্না বলেন, সাব্বিরের শরীরে ৩২টি গুলি করা হয়েছিল। যারা গুলি করেছে তাদের বিচার চাই। রাষ্ট্রের কাছে আমার দাবি, আমি পিতৃহীন শিশুকে নিয়ে আমি বাঁচতে চাই। ছেলেকে স্মরণ করছেন মা মায়া বেগম। তিনি বলেন, ছেলের হত্যাকারী তাহেরপুত্র টিপু ও শাহীনসহ হত্যাকারীদের বিচার চাই। শহরের দক্ষিণ তেমুহনীকে শহীদ সাব্বির চত্বর ঘোষণার দাবি জানাই। একই দাবি তার বাবা আমীর হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতাকর্মীদের।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category



© All rights reserved ©  রংধনুটিভি ২০২৪
ESA IT BD Software Lab Trishal