বিয়ের সম্পর্ক অস্বীকার, স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে জামায়াত নেতার বাড়িতে নারীর অনশন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর ভোলার চরফ্যাশনে সেই নেতাকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চরফ্যাশন উপজেলা শাখা।
সোমবার (৫ মে) বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী চরফ্যাশন উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা আবুল কাশেম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চরফ্যাশন উপজেলা এওয়াজপুর ইউনিয়ন সেক্রেটারি মো. সাইফুল্লাহ মানসুরের বাড়িতে স্ত্রীর দাবিতে এক তরুণীর অনশন মর্মে বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ আমাদের দৃষ্টি গোচর হওয়ার পর সংগঠন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রাথমিক তদন্তে তরুণীর দাবির পক্ষে কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি অধিক তদন্তের স্বার্থে তাকে দলীয় পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। অধিক তদন্তে তিনি দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, ভোলার চরফ্যাশনে জামায়াত নেতার বাড়িতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে অনশনে বসেছেন এক তরুণী। শুক্রবার (২ মে) বিকেলে উপজেলার এওয়াজপুর ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ মানসুর হেলালের বাড়িতে অনশন শুরু করেন তরুণী। তরণীর অনশনের খবর ছড়িয়ে পরলে জামায়াত নেতার বাড়িতে তরুণীকে দেখতে ভিড় জমান এলাকাবাসী।
এদিকে তরুণীর অনশনের খবর পেয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন জামায়াত নেতা ও তার পরিবারের লোকজন। অভিযোগ ওঠা সাইফুল্লাহ মানসুর হেলাল এওয়াজপুর ইউনিয়ন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবু তাহেরের ছেলে ও একই ইউনিয়নের জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি।
তরুণী জানান, সাইফুল্লাহ মানসুর তার দুঃসম্পর্কের ফুফাত ভাই। তিন বছর আগে প্রেমের প্রস্তাব দেন সাইফুল্লাহ। পরে মুঠোফোনে কথা হয় দুজনের। এরই মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের সূত্র ধরে সম্পর্কের দীর্ঘদিন পর পরিবারের অজান্তে পালিয়ে বিয়ে করেন দুজন। বিয়ে করে ঢাকায় গিয়ে কাবিন দেখিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন সংসার করেন তারা। পরে তাকে ভাড়া বাসায় রেখে গ্রামের বাড়িতে আসেন সাইফুল্লাহ। এ সময় থাকা খাওয়ার জন্য টাকা পাঠাতেন সাইফুল্লাহ।
গত শুক্রবার বিকেলে সাইফুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ঘর তালাবদ্ধ। বাইরে ঘরের সিঁড়িতে বসে অনশনে আছেন তরুণী। অনশনরত তরুণী বলেন, ‘আমাকে বিয়ে করে দীর্ঘদিন সংসার করেছে সাইফুল্লাহ। এখন তার মা-বাবা আমাকে মেনে না নেওয়ায় তিনিও আমাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করছেন। স্ত্রীর স্বীকৃতি না দিলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই আমার।’
এদিকে ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দেন অভিযুক্ত সাইফুল্লাহ মানসুর। মুঠোফোনে কল দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
চরফ্যাশন উপজেলা জামায়াতের আমির মীর শরিফ জানান, তারা পরস্পর আত্মীয়স্বজন। ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলক হতে পারে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসব।
এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক হাসান রাসেল।