জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এই ঘটনার দায়ীদের বিচার হতে হবে, তবে জাতিসংঘ মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে নয়।
৫ মার্চ বুধবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মিশনে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নৃশংসতা ও নিপীড়নের তথ্য উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত। এ সময় জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদন পেশকালে ভলকার তুর্ক বলেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নৃশংসতা ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে। এই ঘটনায় দায়ীদের অবশ্যই বিচার হতে হবে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘ কীভাবে তথ্য সংগ্রহ করেছে তা উল্লেখ করেন ভলকার তুর্ক। এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন,জাতিসংঘ বাংলাদেশের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনা অনুসন্ধান করেছে বলে আমরা কৃতজ্ঞ। প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ়ভাবে কাজ করবো। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি কমিশনও গঠিত হয়েছে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে যাত্রাবাড়ী এলাকার নৃশংসতা নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র দেখানো হয়। জুলাই-আগস্টে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘটে। তীব্র জনরোষের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। অভ্যুত্থানকালে তৎকালীন সরকারের নির্দেশে নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের গুলিতে রাজপথে ঝরে শত শত তরতাজা প্রাণ, যাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশুও ছিল। হাজার হাজার মানুষ আহত হন, যাদের অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান কার্যক্রম চালায় জাতিসংঘ। গত ১২ ফেব্রুয়ারি এর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ০১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এ সময় আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। আহতরা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীসমূহের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।